বাংলা আর্টিকেল লিখার ৯ টি নিয়ম

আপনি কি আর্টিকেল লিখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান? আর্টিকেল লিখার নিয়ম জানতে হলে আমাদের আগে জানতে হবে আর্টিকেল কী? আর্টিকেল একটি বিশেষ ধরনের লেখা, যার দ্বারা কোনো বিষয় নিয়ে তথ্য প্রকাশ করা হয়। 


এছাড়া কোনো নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে আর্টিকেল লেখা হয় এবং সংবাদপত্র বা ওয়েবসাইটের মতো বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। কোনো বিষয়ে গবেষণা, শিক্ষা, বিতর্ক বা কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে আর্টিকেল লিখা যেতে পারে।

পেজ সূচিপত্রঃ বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম

বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম

বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়মের শুরুতেই জানতে হবে টাইটেল সম্পর্কে।আর্টিকেলের টাইটেল হতে হবে ছোটো এবং সহজবোধ্য।টাইটেল এমন হতে হবে তা যেন সরাসরি আর্টিকেলের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারনা দেয়।টাইটেলে কীওয়ার্ড যুক্ত করতে হবে,এতে আর্টিকেল SEO ফ্রেন্ডলি হবে।তবে খেয়াল রাখতে হবে,কীওয়ার্ড যেন অতিরিক্ত বা শব্দবহুল না হয়।

আর্টিকেলের টাইটেল এমন একটি  বিষয়বস্তু,যা দ্বারা পাঠক আর্টিকেল পড়তে আকৃষ্ট হয় অথবা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।তাই আর্টিকেলের টাইটেল পাঠকের সামনে চমকপ্রদ ভাবে উপস্থাপন করতে হবে।খেয়াল রাখতে হবে টাইটেল কোনোভাবেই যেন সেনসিটিভ ইস্যুকে কেন্দ্র করে লিখা না হয়।এতে পাঠক পোস্ট পড়তে আগ্রহী না হয়ে উল্টো বিরক্ত হবে।


আর্টিকেলের সূচনা।বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম

একটি ভালো আর্টিকেলের শুরুতে একটি আকর্ষণীয় সূচনা থাকা আবশ্যক।এতে পাঠক সহজেই বুঝতে পারে পুরো আর্টিকেল জুড়ে কী কী বিষয় রয়েছে। পাঠক যদি সূচনা পড়ে আকৃষ্ট না হয়,তবে সে পুরো পোস্ট না পড়েই চলে যেতে পারে। তাই সূচনা এমনভাবে লিখতে হবে যেন পাঠক আগ্রহ নিয়ে পুরো পোস্ট পড়ে এবং দীর্ঘ সময় নিয়ে ওয়েবসাইটে অবস্থান করে।

একটি সূচনায় বলে দেয় আর্টিকেলের তথ্যগুলো কেমন হবে;তা ইনফরমেটিভ হবে নাকি এলোমেলো কথা হবে।তাই সূচনা যতটা সম্ভব গুছিয়ে লিখার চেষ্টা করবেন।পাঠক আপনাকে চেনেনা,পাঠক শুধু লিখা দেখে আপনাকে বিচার করবে।আর পুরো আর্টিকেল কেমন হবে তা বিচার করবে আপনার লিখা সূচনা দেখে।তাই এই বেপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।

বিষয়বস্তু উপস্থাপন করবেন সহজ ও সাবলিলভাবে

র্আটিকেল লিখার নিয়মের মধ্যে পুরো কাঠামোর সৌন্দর্য নির্ভর করে আপনি বিষয়বস্তু কীভাবে উপস্থাপন করছেন তার উপর।আর্টিকেল এর বিষয়বস্তু যেন পরিষ্কারভাবে উপস্থাপিত হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। প্রতিটি অনুচ্ছেদে যেন একটি নির্দিষ্ট বিষয় আলোচনা করা হয় এবং প্রতিটি আলোচ্য বিষয়ের প্রাসঙ্গিক সাব-হেডিং থাকা বাঞ্ছনীয়।

আরও পড়ুনঃ হাটুর ব্যাথা সারানোর উপায়

লিস্ট বা পয়েন্ট আকারে লিখলে পাঠকের বুঝতে সুবিধা হবে।প্রাসঙ্গিক আলোচনা ব্যতীত অতিরিক্ত কথা পাঠকের বিরক্তির কারণ হতে পারে,তাই অতিরিক্ত কথা পরিহার করা করবেন।আপনি এমনভাবে লিখবেন,যেন মনে হয় পাঠক আপনার সামনে বসে আছে বা আপনারা গল্প করছেন।আমি/আপনি এসব শব্দ ব্যবহার করবেন,এতে পাঠকরা আপনার লিখাকে সহজে গ্রহন করবে।

ইমেজ সেট করা। বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম

আর্টিকেলের মধ্যে ইমেজ থাকলে তা আরও আকর্ষণীয় দেখায় এবং পাঠকেরও আগ্রহ বাড়ে।তবে অনেকেই গুগল থেকে যেকোনো ফটো ডাউনলোড করে আর্টিকেলে যুক্ত করে কিংবা কোনো ইমেজের URL কপি করে ইমেজ হিসেবে যুক্ত করে,এতে ইমেজটি কপিরাইট এ অভিযুক্ত হতে পারে বা যে ইমেজের URL কপি করা হয়েছে তা মূল ওয়েবসাইট থেকে ডিলিট করলে আপনার ওয়েবসাইট থেকেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিলিট হয়ে যাবে।

এই সমস্যা সমাধানে গুগল থেকে কীভাবে কপিরাইট মুক্ত ইমেজ ডাউনলোড করবেন তার একটি স্ক্রিনশট দেয়া হয়েছে।প্রথমে গুগলে যে বিষয়ের ফটো চাচ্ছেন,তা লিখে সার্চ দিবেন।সার্চ বক্সের নিচে ডান দিকে টুলস এ ক্লিক করবেন,সেখান থেকে ইউসেজ রাইটস থেকে ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সেস লিখা দেখতে পাবেন,সেখানে ক্লিক করে যে সকল ফটো দেখতে পাবেন সব ফটো আপনি আপনার ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে পারবেন কোনো প্রকার কপিরাইট ছাড়া।

SEO অনুসরণ করা

অনলাইনে আর্টিকেল প্রকাশ করতে হলে  SEO অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।

  • মূল কীওয়ার্ড টাইটেল,সূচনা ও উপসংহারে ব্যবহার করুন।
  • সাব-টাইটেলে কীওয়ার্ড যুক্ত করবেন।
  • আর্টিকেল কমপক্ষে ৮০০-১০০০ শব্দের হলে সার্চ ইঞ্জিনে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
  • মেটা ডেসক্রিপসন ও মেটা ট্যাগ ব্যবহার করুন।

SEO এর নিয়মকানুন সঠিকভাবে অনুসরন করতে পারলে আর্টিকেলটি সহজে গুগল সার্চে প্রথম পেজে আসতে পারবে এবং আপনার আর্টিকেল বেশি ভিউ হবে।তাই আর্টিকেল লিখার পাশাপাশি আর্টিকেল বেশি পাঠক পর্যন্ত পৌঁছে দেবার জন্য SEO এর দিকে গুরুত্ব দিতে হবে।উপরে উল্লিখিত পয়েন্টগুলো ছাড়াও আপনার টাইটেল কিওয়ার্ড কত বেশি ব্যবহার করছেন,সেটিও SEO এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

পাঠককে টার্গেট করে আর্টিকেল লিখুন

আর্টিকেল লিখার সময় খেয়াল রাখতে হবে তা যেন নির্দিষ্ট পাঠককে উদ্দেশ্য করে লিখা হয়।কারন একই বিষয় সব বয়সের পাঠক বা সব লিঙ্গের পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে।আপনার লিখা কারও কাছে উপকারি আবার কারও কাছে অসামঞ্জস্য বা ক্ষতিকর হতেই পারে।যেমনঃআপনি যদি স্বাধীনভাবে বাঁচার উপকারিতা নিয়ে আর্টিকেল লিখেন,তাহলে সবার জন্য এটি গ্রহণযোগ্য হবেনা।স্বাধীনতা সবার জন্য সুখকর হয়না।


আবার বৃদ্ধ বয়সে মানুষ সবচেয়ে একাকীত্বে ভোগে।তাই একাকীত্ব নিয়ে লিখার সময় বয়স্ক লোকেদের জীবনযাপন সম্পর্কে গবেষণা করে আপনাকে আর্টিকেল লিখতে হবে।তবে এখানে উল্লেখ্য যে,সব বয়স বা লিঙ্গের মানুষ একাকীত্বে ভগে,তবে সবার ধরন আলাদা আলাদা।তাই আপনি কোন ধরনের পাথককে টার্গেট করে লিখছেন তা আগেই নির্ধারণ করতে হবে।

প্যারাগ্রাফ খুব বড় করে লিখবেন না

প্যারাগ্রাফ এর সাইজ ছোট রাখার চেষ্টা করবেন।পাঠক যেন বড় প্যারাগ্রাফ পড়তে গিয়ে বিরক্ত না হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে।আপনি একটি প্যাড়া ৪ থেকে ৫ লাইন রাখার চেষ্টা করবেন।প্রয়োজনে ৫ লাইন করে ৪ টি বা ৫ টি প্যারা লিখবেন।এতে পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখা যাবে।প্রথম প্যারাতে যে হেডিং নিয়ে লিখছেন তার ভূমিকা উপস্থাপন করবেন,পরের প্যারাগুলোতে যতটা সম্ভব ব্যাখ্যা করবেন।

প্যারাগ্রাফ ছোট রাখতে গিয়ে আবার তথ্য যেন অসম্পূর্ণ না থেকে যায় সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।তথ্য যতটা সম্ভব গুছিয়ে সংক্ষেপে লিখবেন।এতে পাঠকের মনোযোগ আর্টিকেলে ঠিকঠাক ধরে রাখতে পারবেন।মনে রাখবেন,মানুষ সবসময় সহজে বুঝা যায় এমন জিনিস বেশি পছন্দ করে।তাই যত সহজভাবে উপস্থাপন করবেন,ততই লাভবান হবেন।

পয়েন্ট বা তালিকা আকারে লিখুন

যে বিষয়গুলো তালিকা আকারে লিখলে বেশ আকর্ষণীয় দেখাবে বলে আপনি মনে করবেন,সে বিষয়গুলো তালিকা আকারে সাজিয়ে লিখবেন।এতে আপনার আর্টিকেলে একঘেয়ে বিষয়টা থাকবেনা এবং দেখতেও চমকপ্রদ লাগবে।তবে কখনই অহেতুক তালিকা করতে যাবেন না।যেখানে তালিকা করার প্রয়োজন নেই,প্যারা আকারে লিখলেই ভালো দেখায়,সেখানে তালিকা করবেন না।

আরও পড়ুনঃ যে ১২ টি উপায়ে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো আপনি লিখা শুরু করলেই বুঝতে পারবেন,কোথায় তালিকা করা উচিত আবার কোথায় প্যারা আকারে লিখলে ভালো হবে।প্রতিটা মানুষের উপস্থাপন ভঙ্গি আলাদা হবে এটাই স্বাভাবিক।আপনার উপস্থাপন ভঙ্গি কেমন হবে তার উপর ভিত্তি করে সফলতা আসবে।তাই উপস্থাপন ভঙ্গি আপনার নিজেকে চিন্তা করে আয়ত্ত করতে হবে।

বেশি বেশি উদাহরণ ব্যবহার করবেন

পাঠকের বুঝার সুবিধার্থে এমন কিছু উদাহরণ দেয়া যেতে পারে যেন পাঠক আর্টিকেলের বিষয় সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা লাভ করতে পারে। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিসংখ্যান,উক্তি দেবার ক্ষেত্রে তথ্য যেন নির্ভরযোগ্য হয় তা খেয়াল রাখবেন।উদাহরণ যেন অপ্রাসঙ্গিক না হয় বা ভুল না হয়,এতে পাঠকের বিরক্তির কারণ হতে পারে আপনার পোস্ট এবং ওয়েবসাইট।

উদাহরন একটি আর্টিকেলের প্রতিটি হেডিং সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে পারে।এর মাধ্যমে পাঠক আপনার লিখার উদ্দেশ্য সহজে অনুধাবন করতে পারবে।তবে উদাহরন যেন উদ্ভট ধরনের না হয় তা খেয়াল রাখবেন।আপনি যত সহজ করে উদাহরন উপস্থাপন করবেন,পাঠক তত বেশি আপনার আর্টিকেলের প্রতি আকৃষ্ট হবে।তাই সবসময় সহজভাবে চিন্তা করবেন এবং সহজভাবে লিখার চেষ্টা করবেন।

বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম-শেষ কথা

বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম সম্পর্কে এতক্ষন যা যা পড়লেন,এখানে আর্টিকেল লিখার বেসিক বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।বেসিক বিষয়গুলো অনুসরণ করলে আপনি একটি পূর্ণাঙ্গ আর্টিকেল সহজে লিখতে পারবেন।এছাড়া এস ই ও অনুসরণ করলে আপনার আর্টিকেল বেশি পাঠকের দৃষ্টি আকরসন করতে সক্ষম হবে।তবে সবসময় লিখা সহজে বোধগম্য হয়-এমনভাবে লিখার চেষ্টা করবেন।

পোস্ট লেখা শেষে আপনার নিজস্ব মন্তব্য যুক্ত করবেন।এতে আপনার অভিমত পাঠক জানতে পারবে এবং আর্টিকেল লেখার নিয়মের সাথে বাড়তি টিপস হিসেবে কাজ করবে আপনার এই মন্তব্য। এছাড়া আর্টিকেল লিখতে হবে নিরিবিলি জায়গায় এবং সময় নিয়ে;তাহলে বেস্ট আউটপুট দেয়া সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিপস হলো-বানান এবং বংলা ব্যাকরণ সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা  আবশ্যক,কারন আপনি যেহেতু আর্টিকেল বাংলায় লিখছেন।আশা করি এই লিখাগুলো পড়ে আপনি উপকৃত হবেন।





এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নেটপিক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url